মিঠামইন হাওর, কিশোরগঞ্জ

মিঠামইন হাওর
Telegram Channel Join Now

মিঠামিন হাওর কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় অবস্থিত। হাওর মানে চারপাশে থৈ থৈ পানি, ছোট নৌকায় মানুষের কর্ম তৎপরতা, হাওরের জলে দ্বীপের মতো ভাসমান গ্রাম। ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য হাওরের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বর্ষায় হাওর মানেই ভিন্ন প্রকৃতি, ভিন্ন জীবনধারা। আপনি আপনার দৈনন্দিন জীবন থেকে সময় বের করতে পারেন এবং বর্ষাকালে একবার জীবন উপভোগ করতে পারেন। মিঠামইনকে ঘিরে রয়েছে কিশোরগঞ্জের আরও তিনটি হাওর উপজেলা, ইটনা, অষ্টগ্রাম ও নিকলী। তাই বলা যায় ভ্রমণের জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাড়ি এ উপজেলার কমলাপুর গ্রামে। আপনি চাইলে সেখানে ভ্রমণের সময় কিছুটা সময় কাটাতে পারেন।

মিঠামিন হাওরে কোন সময়ে যাবেন?

হাওরের প্রকৃতি ঋতুভেদে পরিবর্তিত হয়। প্রতি ঋতুতে হাওর তার আকৃতি পরিবর্তন করে। বর্ষা মৌসুমে মিঠামিন হাওর ভ্রমণের আদর্শ সময়। তাহলে দেখতে পাবেন হাওরের আসল রূপ। সর্বত্র জল। অর্থাৎ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর হল মিঠামিন ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে হাওরে পানির স্তর নামতে শুরু করে। তাই তার আগে পূর্ণ বর্ষায় যাওয়ার চেষ্টা করুন।

মিঠামইনে দর্শনীয় স্থান

ট্যুর ছাড়াও মিঠামইনে দেখার মতো অনেক ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা রয়েছে, উল্লেখযোগ্যগুলো হল:

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাড়ি

কামালপুরের মিটামাইন গ্রামে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাড়িতে কিছুটা সময় কাটাতে পারেন। মিঠামিন থেকে রিকশায় করে উপজেলা সদরে যাওয়া যায়।

মালিক দরগাহ

মেটামাইন থেকে ট্রলার যোগা। সেখান থেকে মাছ ধরার নৌকা নিয়ে মালিকের দরগায় ফিরে যেতে হয়। ফেরার সময় মালিকের দরগা থেকে ট্রলার নিয়ে ঘাগরা। ঘাগড়া থেকে আবার মাছ ধরার নৌকার সাহায্যে খনন কার্যক্রম শুরু করতে হবে। এটি ১ ঘন্টা ৪০ মিনিট সময় নেয়। শুষ্ক মৌসুমে মিঠামিন থেকে টেম্পুতে ঘাগরা বা মোটরবাইকে করে মালিকের দরগায় যাওয়া যায়।

দিল্লি স্টেডিয়াম

কিশোরগঞ্জ থেকে বাসে বা সিএনজি করে খাদি ঘাট। চামড়ার ঘাট দিয়ে মাছ ধরার নৌকায় করে দিল্লির আখড়ায় নিয়ে যেতে হয়।

এছাড়াও রয়েছে বহু বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী মসজিদ। মিঠামইন উপজেলার নারীদের তৈরি বিভিন্ন হস্তশিল্প এখানকার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। এছাড়াও, এই অঞ্চলে নৌকা চালানো, লাঠি খেলা ইত্যাদির মতো অনেক ঐতিহ্যবাহী খেলা রয়েছে। আপনি যদি এমন সময়ে যান যখন নৌকায় চড়া হয়, আপনি এই বাংলার একটি ভিন্ন ঐতিহ্যের সাথে পরিচিত হতে পারেন। মিঠামইন বাজারের কাঠমহল এখানকার ঐতিহ্যের আরেক নিদর্শন।

কিভাবে যাবেন

মিঠামিনে যেতে হলে দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে প্রথমে কিশোরগঞ্জে আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে কিশোরগঞ্জ পৌঁছানো যায়। ঢাকার মহাখালী গোলাপবাগ ও সায়েদাবাদ থেকে সকাল সাড়ে ৫টা থেকে কিশোরগঞ্জ পর্যন্ত অনন্যা, অনন্যা সুপার সার্ভিস ও কমিউটার বাস প্রতি ১৫ মিনিটে চলাচল করে। ভাড়া জনপ্রতি ১৯০ থেকে ২২০ টাকা। ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ যেতে সময় লাগে সাড়ে তিন ঘণ্টার মতো।

কোথায় থাকবেন

মিঠামইনে থাকার জন্য ভালো কোনো আবাসিক হোটেল নেই। তারপরও কোনো কারণে চাইলে শিকদার হোটেল ও সোহেল গেস্ট হাউসে থাকতে পারেন। এগুলো স্ট্যান্ডার্ড বোর্ডিং। এছাড়াও, আপনি উপজেলা ডাকবাংলোতে থাকতে পারেন। সেক্ষেত্রে আগে থেকেই তাদের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। অথবা কিশোরগঞ্জ শহরে হোটেল রিভারভিউ, ক্যাসেল সালাম, নিরালা, হোটেল গাঙচিল, উজানভাটি নামে কিছু ভালো মানের হোটেল আছে। আপনি তাদের মধ্যে বসবাস করতে পারেন.

কোথায় খাবেন

খাওয়ার জন্য মেথামিন বাজারে বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট আছে। এসব রেস্তোরাঁয় আপনি ভাত ভর্তার সাথে মিঠামইন হাওরের বিভিন্ন তাজা মাছের পণ্য পাবেন। জনপ্রতি খাবারের দাম পড়বে ১২০ থেকে ২০০ টাকা।

কিশোরগঞ্জ জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

মিঠামইন ছাড়াও কিশোরগঞ্জ জেলায় রয়েছে নিকলী হাওর, ইটনা হাওর, শহরের নরসুন্দা লেক, চন্দ্রাবতী মন্দির, বাংলার প্রথম নারী কবিমানব বাবুর জমিদার বাড়িসহ আরও অনেক দর্শনীয় স্থান। হাতে সময় এবং সুযোগ বুঝে আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন।