পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার থেকে টেকনাফের দিকে মাত্র ২৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি নির্জন সমুদ্র সৈকত। ভ্রমণকারীরা যদি সিন্ধু নদীর তাজা এবং বিশুদ্ধ সমুদ্রের হাওয়া অনুভব করতে চান তবে তাদের অবশ্যই পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকতে যেতে হবে। পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের অন্যান্য সৈকত থেকে ভ্রমণকারীদের কাছে একটু ভিন্ন মনে হবে।
কেন পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকতে যাবেন
এই সমুদ্র সৈকতের নির্জনতা যে কাউকে ভ্রমণে আকৃষ্ট করবে। পাটুয়ারটেক রুটে, ভ্রমণকারীরা পাহাড়ের ঢালে পড়ে থাকা ঝরা পাতাগুলি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। আর পশ্চিম দিকে সুনীল সাগরের বিশাল জলরাশি দেখতে পাবেন। পাহাড় এবং নীল সমুদ্রের এই দুর্দান্ত দৃশ্য সত্যিই চিত্তাকর্ষক, যা যে কোনও ভ্রমণ প্রেমিককে পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকতে যেতে আকৃষ্ট করবে।
পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত দেখার আদর্শ সময়
পাটুয়ারটেক সৈকতের আরেকটি সুন্দর বৈশিষ্ট্য হল পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত প্রায় সবসময় শান্ত থাকে। তাই যারা রুক্ষ সাগরে যেতে ভয় পান তারা চাইলে পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকতে নেমে যেতে পারেন। এখানকার সৌন্দর্য দেখার আদর্শ সময় হল ভোরে বা বিকেলে।
কোথায় অবস্থিত ?
বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে অবস্থিত পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত। কক্সবাজার শহর থেকে পাটুয়ারটেকের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার।
পাটুয়ারটেক কখন যাবেন ?
যেকোনো সময়েই আপনি পাটুয়ারটেক সৈকতে যেতে পারেন। তবে সব থেকে ভালো হয় বিকেলে গেলে। ওই সময় ভিড় একটু কম থাকে। আর পাটুয়ারটেক সৈকত থেকে সূর্যাস্ত দেখতে দারুণ লাগে। সকালে কক্সবাজারে সময় কাটিয়ে দুপুরের একটু আগে রওনা দিয়ে মেরিন ড্রাইভে কোনো রেস্তোরাঁয় লাঞ্চ করে নিতে পারেন। লাঞ্চ শেষে চলে যাবেন পাটুয়ারটেক।
পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত কিভাবে যাবেন ?
পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকতে যেতে হলে আপনাকে প্রথমে কক্সবাজার শহরে আসতে হবে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার জন্য বাস, ট্রেন এবং ফ্লাইট রয়েছে। ঢাকা-কক্সবাজার রুটে প্রতিদিন বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির বাস চলাচল করে। বাসে কক্সবাজার যেতে সাধারণত ৮ -১০ ঘন্টা সময় লাগে। বর্তমানে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে প্রতিদিন দুটি ট্রেন চলাচল করছে। ট্যুরিস্ট এক্সপ্রেস কমলাপুর থেকে সকাল ৬:১৫ টায় এবং কক্সবাজার এক্সপ্রেস রাত ১০:৩০ টায় ছাড়ে। এই ট্রেনগুলো কক্সবাজার পৌঁছাতে প্রায় ৯ ঘণ্টা সময় নেবে। এছাড়াও, আপনি চাইলে ফ্লাইটে প্রায় ৫০ মিনিটের মধ্যে কক্সবাজার পৌঁছাতে পারেন।
সৈকতে কী কী করবেন ?
পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত ঘুরে দেখার জন্য কোয়াড বাইক ভাড়া করা যেতে পারে, সেইসাথে ঘোড়ায় চড়েও ঘুরে দেখতে পারবেন। এছাড়া কক্সবাজারের অন্যান্য সমুদ্র সৈকতের মতো এখানেও ছবি তোলার সুবিধা রয়েছে। তবে যেকোন পরিষেবা নিয়োগের আগে, আপনাকে সবকিছু পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে এবং এর শর্তগুলি নিজেই বুঝতে হবে। অন্যথায়, সমস্যা হতে পারে।
কোথায় থাকবেন ?
এখন পাটুয়ারটেক বীচের কাছে বেশ কিছু হোটেল ও রিসোর্ট গড়ে উঠেছে। তার মধ্যে ইনানী রয়্যাল রিসোর্ট, রয়্যাল টিউলিপ রিসোর্ট, লা বেলা রিসোর্ট, ডেরা রিসোর্ট উল্লেখযোগ্য। তবে এখান থেকে কক্সবাজার অনেক কাছে, তাই এখানে না থেকে কক্সবাজার এসে পছন্দমতো কোনো হোটেলে থাকাই ভালো।
কোথায় খাবেন ?
এই মেরিন ড্রাইভেই বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। ড্রাইভারকে বললে ভালো কোথাও নিয়ে যাবে। বিচের কাছে কিছু টং দোকান আছে। যেখানে পানি, কোক, কেক ইত্যাদি হালকা খাবার কিনতে পারবেন। এছাড়া কক্সবাজার এসেও কোনো রেস্টুরেন্টে খেতে পারেন। পৌষী, ধানসিঁড়ি, রোদেলা, ঝাউবন, নিরিবিলি রেস্টুরেন্ট কক্সবাজারে বেশ জনপ্রিয়।